বাংলাভূমি ডেস্ক ॥
পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা ও দশমিনা) আসনে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মাওলা রনি প্রচারে বাধার অভিযোগ করছেন বেশ কয়েক দিন ধরে। গতকাল তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে একা প্রচারে গেলে সেখানেও হামলার শিকার হন বলে জানান ধানের শীষের এ প্রার্থী। এ সময় পুলিশের আচরণে বিস্মিত হয়েছেন বলেও দাবি করেন রনি।
বৃহস্পতিবারের ওই ঘটনা নিয়ে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন রনি, যা ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
রনির স্ট্যাটাসের প্রথমেই লেখা আজ এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল আমার জীবনে। রনির স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হল-
‘আজ এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল আমার জীবনে। গত প্রায় সাত দিন ধরে অবরুদ্ধ থাকতে গিয়ে প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ডিসিসহ গলাচিপা-দশমিনার প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাচ্ছিলাম না- ফলে কী করা উচিত তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত সময় পার করছিলাম।
ব্যক্তিগতজীবনে আমি সর্বদা নম্র, ভদ্র থাকার চেষ্টা করি। সব পরিস্থিতি পরম ধৈর্য, সাহস ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে মোকাবেলা করি।
আজ সকালেও বহু পক্ষের নানামুখী উসকানি সত্ত্বেও নিজ সিদ্ধান্তে অটল থেকে প্রাণবন্ত অবস্থায় সময় পার করছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে কি যে হল বুঝতে পারলাম না। আমার ওপর কোনো জিন বা ফেরেশতা ভর করেছিল কিনা তাও বলতে পারব না। আমি একটি হোন্ডা নিয়ে কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে দশমিনার দিকে রওনা হলাম।
আমার বাসার আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কয়েকশ বিএনপি নেতাকর্মী আমার পিছু নিলেন। দশমিনা বিএনপি অফিসে যখন পৌঁছলাম, তখন দেখতে পেলাম কয়েক হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়ে পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছেন।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ, প্রশাসন, ম্যাজিস্ট্রেট, ডিবি, এসবি সবাই এলেন। আরও এলেন আওয়ামী লীগের নামধারী গুণ্ডা বাহিনী। তারা দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটা, ইটপাটকেল নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণের চেষ্টা করল।
দশমিনা থানার ওসি তার বাহিনী নিয়ে গুণ্ডাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলেন। গুণ্ডারা পুলিশ ও প্রশাসনকে নিজেদের অনুগত বাহিনী মনে করে তাদের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ শুরু করল। ডিএসবির একজন সিনিয়র সদস্য গুণ্ডাদের ছবি ভিডিও করছিলেন। গুণ্ডারা তাকে আক্রমণ করে বসল। পুলিশ তখন গুণ্ডাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করল।
দশমিনা থানার ওসি আমাকে সসম্মানে তার পুলিশি গাড়ির প্রটোকল দিয়ে নিরাপদে আমার বাসস্থানে পৌঁছে দিলেন। পুলিশের এ নিরপেক্ষ আচরণে আমি বড়ই আশ্চর্য হয়েছি। একই সঙ্গে আমার পুলিশ ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞতায় মন ভরে গেছে।
ধন্যবাদ দশমিনা থানা পুলিশ এবং ধন্যবাদ দশমিনার সুদক্ষ ওসি সাহেবকে। একই সঙ্গে দশমিনার দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকেও ধন্যবাদ যিনি, অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পুরো পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন।’
সুলেখক ও সুবক্তা গোলাম মাওলা রনির এই স্ট্যাটাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গোলাম মাওলা রনি ২০০৮ সালে পটুয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি এ আসনে নৌকার টিকিট চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপিতে যোগ দেন। বিএনপি তাকে এ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর গলাচিপা সদরে প্রচারের সময় তার স্ত্রী কামরুন্নাহার রুনুর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ করেন রনি। ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেন তিনি।