বুধবার , ১৩ই নভেম্বর, ২০২৪ , ২৮শে কার্তিক, ১৪৩১ , ১০ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > গ্যালারীর খবর > আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ না করলে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না: মোহাম্মদ নাসিম

আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ না করলে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না: মোহাম্মদ নাসিম

শেয়ার করুন

আকরাম হোসেন রিপন ও মীর মাসুদ করিম
কাপাসিয়া ব্যুরো ॥
গাজীপুর: আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ গ্রহণ না করলে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। ইলেকশন শুরু হয়ে গেছে, নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেন। মাঠে গিয়ে ভোট চান, জনগণ ভোট দিলে মেনে নেব। অন্যকোন পন্থায় ক্ষমতায় আসার কোন সুযোগ নাই। কয়েকদিন আগে দূর্গাপূঁজার ঢোলের বাড়ি শুনেছেন, আর কিছুদিন পর ইলেশনের ঢোল বাঁজবে। বেগম খালেদা জিয়ার দলকে বলবো, ইলেকশনের কার্যক্রম শুরু করেন। অযথা কেন দফা দিয়ে আন্দোলনের হাকডাক করবেন না। তিনি আজ শনিবার দুপুরে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে নির্মিত সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন নার্সিং কলেজের উদ্বোধন শেষে সমাবেশে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও করেন আর শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন করেন। বিশ^কাপ ফুটবল খেলায় মেসি-নেইমার প্রত্যাশিত গোল করতে পারেনি, কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা অবশ্যই গোল করবে। ১৪ সালে নির্বাচন না হলে দেশে মার্শাল-ল হতো। মার্শাল-ল না আসায় কামাল হোসেনরা হায় হোসেন, হায় হোসেন করেছেন।
ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু আপনাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী বানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামীলীগই আপনাকে ড. কামাল বানিয়েছে। কেন আপনার মতিভ্রম হলো, নীতিভ্রম হলো ? আগামী নির্বাচনে নৌকার কোন বিকল্প নেই। নৌকার বিকল্প কেবল নৌকাই।


স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী নাসিম আরো বলেন, বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ সহ জাতীয় চার নেতা বঙ্গবন্ধু’র বিশ^স্ত সহচর ও বন্ধু ছিল। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন আওয়ামীলীগের দুঃসময়ে হাল ধরেছিলেন। বঙ্গতাজের সহধর্মীনী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের নামে নার্সিং কলেজের নামকরণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। অনেকে আইনের শাসনের কথা বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলেন। কিন্তু মোস্তাক-জিয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারী করে হত্যার বিচার বন্ধ করেছিল। ২১ বছর পিতা হত্যার বিচার পাইনি। মামলা করতেও সাহস পাইনি। তখন কোথায় ছিল বিচার, কোথায় ছিল আইনের শাসন? শুনেছি কাপাসিয়ায় নতুন নতুন নেতার আবির্ভাব হয়েছে। হঠাৎ করে আসা নেতারা কি করবে? তাজউদ্দীনের সন্তান রিমি-সোহেল থাকতে কাপাসিয়ায় আর কোন নেতার প্রয়োজন নেই। তাদের পিছনে আমি আছি, শেখ হাসিনাও ওদের সঙ্গে আছে। তিনি আগামী নির্বাচনে সিমিন হোসেন রিমিকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে কাপাসিয়ার উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখার আহবান জানান।
স্থানীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমির সভাপতিত্বে এবং উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আব্দুর রহীমের পরিচালনায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তানজীম আহমদ সোহেল তাজ, চিকিৎসা শিক্ষা অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব বদরুন নেছা, স্বাস্থ্য বিভাগের নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক তন্দ্রা সিকদার, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম এ মোহী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক এমপি মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুস সালাম, সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ মধূ সুদন চক্রবর্তী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রধান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে সিমিন হোসেন রিমি বলেন, আমরা কাপাসিয়ায় মানবিক সমাজ গড়তে চাই। যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। সাহস করে বলতে চাই, আমি ও আমার প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত। মানুষকে কষ্ট দেয়াও দুর্নীতি। মানুষের সাথে অন্যায় আচরণ করাও দুর্নীতি। আমরা সকল মানুষের জন্য দুর্নীতিমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে চাই। তিনি কাপাসিয়ার উন্নয়নের ফিরিস্থি তুলে ধরে বলেন, কাপাসিয়ার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বিদ্যুতের গ্রাহক ১৮ হাজার থেকে ৮২ হাজার হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রাহকের সংখ্যা ৯২ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
উল্লেখ, সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন নার্সিং কলেজটি নিমার্ণ করতে ব্যয় হয়েছে ২২ কোটি ৩৩ লাখ ৫২ হাজার। নিমার্ণ কাজটি গত ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয়ে। কলেজের ৪তলা একাডেমিক ভবন, ২তলা হোষ্টেল বিল্ডিং, ২তলা গ্যারেজ কাম ড্রাইভার কোয়াটার এবং একটি সাবষ্টেশনের কাজ সম্পন্ন করে ২০১৭ সালের ২৬ জুলাই সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কলেজের সেশন থাকবে ৪টি, প্রতি সেশনে ১০০ জন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির সুযোগ থাকবে। এখানে বিএসসি ইন নার্সিং ডিগ্রী কোর্স চালু করা হচ্ছে বলে বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়।