বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: সাধারণ বিমা কোম্পানিতে অতিরিক্ত কমিশন ও বাকি ব্যবসা বন্ধে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। চলতি সপ্তাহে অনিয়মের জন্য আটটি সাধারণ বিমা কোম্পানিকে এক কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আগের সপ্তাহে একই অনিয়মের কারণে ৫ কোম্পানিকে এক কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনিয়মে জড়িত থাকায় আরও কয়েকটি কোম্পানির জরিমানা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
চলতি সপ্তাহে জরিমানার শিকার হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, নীটল ইন্স্যুরেন্স এবং বিমা মালিক ও নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন’র (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেনের মালিকানাধীন সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স।
আইডিআরএ সূত্র জানায়, কোম্পানিগুলোর মানি রিসিপ্ট, ব্যাংক ডিপোজিট স্লিপ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, কাভার নোট ও পলিসি পরীক্ষা করে আইডিআরএ’র জারি করা প্রজ্ঞাপনের শর্ত লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এ জন্য বিমা আইন ২০১০-এর ১৩০ এবং ১৩৪ ধারা অনুযায়ী কোম্পানিগুলোকে জরিমানা করা হয়েছে। অনিয়মে জড়িত থাকায় প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট শাখার ইনচার্জকে পৃথক পৃথকভাবে জরিমানা করা হয়েছে।
অনিয়মের জন্য ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ২৬ লাখ টাকা, নীটল ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ২৬ লাখ টাকা, ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাড়ে ১৯ লাখ টাকা, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা, রূপালী ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাড়ে ছয় লাখ টাকা, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাড়ে ছয় লাখ টাকা, ইসলামী কমার্শিয়াল ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ১৮ লাখ ৫০ হাজার এবং সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে মেঘনা ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ৩৯ লাখ টাকা, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ২৪ লাখ টাকা, রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ১৪ লাখ টাকা এবং ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্স ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
সূত্রটি জানায়, বাকিতে বিমা ব্যবসা ও অতিরিক্ত কমিশন বন্ধে আইডিআরএ ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর ও ২০১২ সালের এপ্রিলে দুটি পৃথক প্রজ্ঞাপন জরি করে। এরমধ্যে বাকিতে বিমা ব্যবসা বন্ধে জারি করা প্রজ্ঞাপনে (প্রজ্ঞাপন নং: জেন-২৯/২০১১) বলা হয়, বিমা পলিসির প্রিমিয়াম ৫ হাজার টাকার বেশি হলে কোম্পানিকে অবশ্যই ডিডি, পে-অর্ডার, ক্রেডিট অ্যাডভাইজ, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার অথবা অ্যাকাউন্টপেয়ি চেকের মাধ্যমে নিতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, বিমা দলিলাদি অবশ্যই চেকের অর্থ পাওয়ার পরে ইস্যু করতে হবে। প্রিমিয়ামের সম্পূর্ণ অংশ কোম্পানিকে কভার নোট, পলিসি, এনডোর্সমেন্ট অথবা অন্য যে কোনো বিমা বিষয়ক অংশ জুড়ে দেওয়ার আগে নিতে হবে। এছাড়া ডিডি, পে-অর্ডার অথবা চেক নম্বর এবং তারিখ মানি রিসিপ্টে উল্লেখ করতে হবে। যে কোনো ধরনের প্রিমিয়াম ফেরত (রিফান্ড) দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই গ্রাহককে জানিয়ে অ্যাকাউন্টপেয়ি চেকে দিতে হবে।
আর ২০১২ সালের এপ্রিলে জারি করা কমিশন হার নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রিমিয়াম আয়ের উপর সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ হারে কমিশন দেওয়া যাবে। এ কমিশন পাবে শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্ত এজেন্টরা এবং তা অবশ্যই একাউন্টপেয়ি চেকের মাধ্যমে দিতে হবে।
এই প্রজ্ঞাপন দুটির নির্দেশ লঙ্ঘন করার কারণে কোম্পানিগুলোকে জরিমানা করা হয়েছে। একই অপরাধে আরও কয়েকটি কোম্পানিকে জরিমানার বিষয়টি আইডিআরএ’র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সূত্রটি আরও জানায়, বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স (বিজিআইসি), তাকাফুল, পাইওনিয়ার, গ্রিন ডেল্টা, ফেডারেল, প্রগতি, এশিয়া, প্রাইম, ইউনিয়ন, প্রভাতী, গ্লোবাল, পিপলস, রিলায়েন্স, এশিয়া প্যাসেফিক, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, জনতা, সিটি জেনারেল, মার্কেন্টাইল, নর্দার্ন জেনারেল ইন্স্যুরেন্সসহ আরো কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে বাকিতে ব্যবসা অথবা অতিরিক্ত কমিশন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান এম শেফাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বাকিতে বিমা ব্যবসা ও অতিরিক্ত কমিশন দেওয়া কোম্পানির স্বার্থবিরোধী কাজ। কোম্পানি ও গ্রাহকের স্বার্থরক্ষায় আইডিআরএ যেকোনো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হবে না। আইডিআরএ’র পরিদর্শক দল নিয়মিত বিভিন্ন কোম্পানিতে পরিদর্শন করবে। যে কোম্পানির বিরুদ্ধেই অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বিমা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাকি ব্যবসা ও অতিরিক্ত কমিশন না দিয়েও সিংহভাগ কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অভিনব পন্থায় কোম্পানি থেকে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে ভুয়া এজেন্টের (কোম্পানিতে কর্মরত না এমন ব্যক্তিকে এজেন্ট হিসেবে দেখানো) নামে কমিশন দেখিয়ে কোম্পানি থেকে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। সিংহভাগ কোম্পানিতে এ ধরনের এজেন্টের পরিমাণ ৫ থেকে ১০ শতাংশ বলে একটি কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
নীটল ইন্স্যুরেন্স’র মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়ার কারণে আইডিআরএ আমাদের জরিমানা করেছে। এখন আইন অনুযায়ী আমরা জরিমানার টাকা পরিশোধ করবো।
ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান বাজারে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর মধ্যে অসম প্রতিযোগিতা চলছে। প্রায় সবাই অতিরিক্ত কমিশন দিচ্ছে এবং বাকিতে ব্যবসা করছে। বাকি না দিলে ও কমিশন না দিলে গ্রাহক অন্য কোম্পানিতে চলে যাচ্ছে। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই অনিয়ম করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, জীবন বিমা কোম্পানিতে ব্যবসা সংগ্রহ করেন এজেন্টরা। কিন্তু সাধারণ বিমা কোম্পানির ব্যবসা সংগ্রহের ক্ষেত্রে এজেন্টদের কোনো ভূমিকা নেই। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে এজেন্টদের ১৫ শতাংশ কমিশন দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। এই কমিশন দেওয়ার নিয়ম করার কারণেই মূলত সাধারণ বিমা কোম্পানিতে আইন লঙ্ঘন হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে ভুয়া এজেন্ট তৈরি করে কমিশন দেওয়া হচ্ছে।
আইডিআরএ’র জরিমানার বিষয়ে তিনি বলেন, আইডিআরএ আমাদের শুনানিতে ডেকেছিলো। কিন্তু জরিমানার বিষয়ে এখনো কোনো চিঠি দেয়নি। তাই এ বিষয়ে এখন কোনো মন্তব্য করবো না।
ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স’র মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম বলেন, বিচার না হওয়ার সংস্কৃতির কারণেই আইন লঙ্ঘন হয়। আইনের সঠিক বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে অবশ্যই আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা কমে আসবে।
ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স: আইডিআরএ’র পরিদর্শক দল প্রতিষ্ঠানটির কর্পোরেট শাখা ও বগুড়া শাখা পরিদর্শন করে অনিয়মের প্রমাণ পায়। এজন্য মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষকে শুনানিতে ডাকে আইডিআরএ। শুনানি শেষে প্রতিষ্ঠানটিকে ২০ লাখ টাকা, সাবেক মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা আব্দুল লতিফ মিয়াকে ৪ লাখ টাকা, কর্পোরেট শাখার ইনচার্জকে দেড় লাখ টাকা এবং বগুড়া শাখার ইনচার্জকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নীটল ইন্স্যুরেন্স: প্রতিষ্ঠানটির কারওয়ানবাজার শাখা ও জয়দেবপুর শাখা পরিদর্শন করে অনিয়মের প্রমাণ পায় আইডিআরএ। এজন্য মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) নীটল ইন্স্যুরেন্স কর্তৃপক্ষকে শুনানিতে ডাকা হয়। শুনানি শেষে কোম্পানিকে ২০ লাখ টাকা, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিমকে ৪ লাখ টাকা, কারওয়ানবাজার শাখার ইনচার্জকে দেড় লাখ টাকা এবং জয়দেবপুর শাখার ইনচার্জকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স: প্রতিষ্ঠানটির নবাবপুর শাখায় অনিয়মের প্রমাণ পায় আইডিআরএ। অনিয়মের জন্য মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষকে শুনানিতে ডাকা হয়। শুনানি শেষে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় কোম্পানিকে ৫ লাখ টাকা ও শাখাটির ইনচার্জকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে অনিয়মের সময় প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা না থাকায় এ পদের কোনো ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়নি।
সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স: প্রতিষ্ঠানটির চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা পরিদর্শন করে অনিয়মের প্রমাণ পায় আইডিআরএ। এ জন্য গত ১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে শুনানিতে ডাকা হয়। শুনানি শেষে কোম্পানিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনিয়মের জন্য আগেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার কারণে প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও শাখাটির ইনচার্জকে কোনো জরিমানা করা হয়নি।
ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স: সদরঘাট শাখায় অনিয়ম করার কারণে গত ১ নভেম্বর শুনানির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে আইডিআরএ। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা জামিরুল ইসলামকে ৩ লাখ টাকা ও শাখাটির ইনচার্জকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রূপালী ইন্স্যুরেন্স: কারওয়ানবাজার শাখায় অনিয়ম করার কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পি কে রায় চৌধুরীকে ১ লাখ টাকা এবং শাখাটির ইনচার্জকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অনিয়মের বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয় গত ১ ডিসেম্বর।
ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স: অনিয়মের জন্য ৩০ নভেম্বর শুনানির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫ লাখ টাকা এবং কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শাহারিয়ার আলমকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে মতিঝিল শাখার ইনচার্জকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ইসলামী কমার্শিয়াল: আইডিআরএ’র পরিদর্শক দল প্রতিষ্ঠানটির মতিঝিলের লোকাল শাখা ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখা পরিদর্শন করে অনিয়মের প্রমাণ পায়। এ জন্য ৩০ নভেম্বর প্রতিষ্ঠানটিকে শুনানিতে ডাকে আইডিআরএ। শুনানির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে ১৫ লাখ টাকা, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়াজ উদ্দিন আহমেদকে ২ লাখ টাকা, মতিঝিলের লোকাল শাখার ইনচার্জকে ১ লাখ টাকা এবং খাতুনগঞ্জ শাখার ইনচার্জকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম