রবিবার , ২২শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৭ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > অলিম্পিকের অল্প গল্প

অলিম্পিকের অল্প গল্প

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ রাশিয়াতে অলিম্পিক আন্দোলনের উত্সমুখে ছিলেন জেনারেল আলেক্সেই দিমিত্রিয়েভিচ বুতভস্কি. তিনি দেশের পদাতিক বাহিনীতেই ছিলেন আর অবসর পাওয়ার পরে সামরিক বাহিনীর লোকদের জন্য নানা রকমের বিশেষ ধরনের জিমন্যাসটিক্স কোর্স তৈরী করে নানা রকমের প্রশিণের প্রতিষ্ঠানে তা শিখিয়ে বেড়াতেন. ১৮৯২ সালে তিনি পিয়ের দ্য কুবেরতেনের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলেন, আর তার দুই বছর পরেই তাঁর অলিম্পিকের খেলাধূলার ধারণাকে সমর্থন করেছিলেন.

তিনি আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সদস্য হয়েছিলেন, ১৮৯৬ সালের এথেন্স শহরের প্রথম অলিম্পিকের সময়ে সেখানে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ও এই নিয়ে ধারা বিবরণও লিখেছেন. বুতভস্কি রাশিয়াতে একমাত্র যেটা করতে সম হন নি, তা হল যে, দেশে অলিম্পিক পরিষদ তৈরী করা.

বুতভস্কি যে কাজ হাতে নিয়েছিলেন, তা চালিয়ে গিয়েছিলেন আরও একজন সামরিক বাহিনীর লোক – কাউন্ট গিওর্গি ইভানোভিচ রিবোপিয়ের. তিনি ১৩ বছর ধরে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সদস্য হয়েছিলেন ও এই সময়ের মধ্যে অলিম্পিকের অনুষ্ঠানের মধ্যে সেই সমস্ত ধরনের খেলাকে অন্তর্গত করতে পেরেছিলেন, যেমন কুস্তি ও ওয়েট লিফটিং. তাঁর নেতৃত্বেই রাশিয়া প্রথম অলিম্পিকে যোগ দিয়েছিল. ১৯০৮ সালে লন্ডনে রিবোপিয়ের পাঁচজন রুশ অলিম্পিক খেলোয়াড়কে নিয়ে গিয়েছিলেন. তাদের মধ্যে তিনজন ফিরে এসেছিলেন অলিম্পিকের মেডেল নিয়ে. রাশিয়ার হয়ে প্রথম অলিম্পিকে সোনার পদক জিতেছিলেন ফিগার স্কেটিংয়ের খেলোয়াড় নিকোলাই পানিন-কলোমেনকিন. অন্য দুটি মেডেল রাশিয়ার কুস্তিগীররা জিতেছিলেন. রাশিয়ার অলিম্পিক কমিটি তৈরী করা হয়েছিল ১৯১১ সালে. তার প্রথম প্রধান হয়েছিলেন ভিয়াচেস্লাভ ইজমাইলোভিচ স্রেজনেভস্কি, সেন্ট পিটার্সবার্গের বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীক ও রুশী ভাষার প্রফেসর. তিনি বিজ্ঞানের নিয়ে কাজ করার সময় বাদে বাকী সময় স্কি ও স্কেট করতেন, একাধিকবার রাশিয়া সাম্রাজ্যের তিনি চ্যাম্পিয়নও হয়েছিলেন. তিনিই রাশিয়ার একটি প্রথম আইস হকি দলের ক্যাপ্টেন ছিলেন.

অলিম্পিকের সোচীর সবচেয়ে ভাল দেখার জায়গা

অলিম্পিকের সোচীর উপরে আতস বাজী পোড়ানোর উত্সব সবচেয়ে ভাল করে দেখতে পাওয়া যেতে পারে আখুন পাহাড়ের উপরে মিনার থেকে. তা শহরের কেন্দ্র থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৬৬৩ মিটার উঁচুতে. এখানের ভিউইং পয়েন্ট থেকে রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর তীরের অর্ধেক সমুদ্র তীর সামনে খুলে যায়: আবখাজিয়ার সমুদ্রতীরের পর্যটন কেন্দ্র পিত্সুন্দা থেকে রাশিয়ার লাজারেভস্কায়া অবধি, আর ভাল আবহাওয়া থাকলে – সমুদ্রে উল্টোদিকের পার ও তুরস্কের শহর পর্যন্ত.

আখুন পাহাড়ের নাম দেওয়া হয়েছে এক প্রাচীন পৌত্তলিক দেবতা আখীন এর নামেই. রূপকথার বর্ণনা অনুযায়ী তিনি দৈত্যাকৃতি ছিলেন, আর সমুদ্র তীর ও পাহাড়ের বাসিন্দাদের রা করতেন শত্রুর আক্রমণ থেকে. আখুন পাহাড়ের উপরে তিনি ঈগল পাখী পুষতেন, যারা তাঁর রাজ্যে শৃঙ্খলা রার কাজ করত.

আখুন পাহাড়ের ভিউইং পয়েন্ট ও তার মিনার একটা মধ্যযুগের কেল্লার মতো, যদিও তা তৈরী করা হয়েছে ১৯৩৬ সালেই. স্থপতিরা সব রকম ভাবেই চেষ্টা করেছেন এই কেল্লার সত্যিকারের বয়স লুকোনোর, যেমন তৈরী করার জন্য ব্যবহার করেছেন চুনা পাথর, শক্ত পাথর, কিন্তু যেগুলো খুবই তাড়াতাড়ি নিজেদের উপরের চকচকে ভাব হারায় ও পুরনো দেখায়. এই মিনারের মাথায় ভিউইং পয়েন্ট যাওয়া যেতে পারে শুধু ২২৪টা সিঁড়ি ভেঙেই, কোন রকমের যন্ত্রে করে ওঠার ব্যবস্থা এখানে করা নেই.

এই মিনারের নীচে সত্যিকারের পুরনো জায়গাও দেখতে পাওয়া যেতে পারে, যেমন, বাইজেন্টাইন সভ্যতার সময়ের মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ. আখুন পাহাড়ের গভীরেই রয়েছে ৪০০ মিটার লম্বা এক গোলকধাঁধা, আটটা সমান্তরাল প্রায় করিডর, যা একে অপরের সঙ্গে নানা জায়গায় একেবারেই নিয়ম বিহীণ ভাবে জোড়া, – এটা সেই সমস্ত লোকের জন্য খুবই ভাল রকমের মজা পাওয়ার জায়গা, যারা অন্ধকারকে ভয় পান না আর মাথার উপরে ঝুঁকে পড়া পাথরের চাঁইকেও না.