শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > অবৈধ সম্পদের অভিযোগ ॥ এমপি এনামুলকে দুদকের অব্যাহতি

অবৈধ সম্পদের অভিযোগ ॥ এমপি এনামুলকে দুদকের অব্যাহতি

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥
ঢাকা: নানা টানাপোড়েনের পর রাজশাহী-৪ আসনে আওয়ামী লীগ সাংসদ এনামুল হককে অবৈধ সম্পদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে তদন্ত করার পরামর্শ দিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাটি।

সম্প্রতি দুদক চেয়ারম্যান মো: বদিউজ্জামান অভিযোগটি নথিভুক্ত করার (অব্যাহতি) অনুমোদন দেন। একই সঙ্গে সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্যের ব্যাপারে আনা অভিযোগটি কর ফাঁকি সংক্রান্ত হওয়ায় তা এনবিআরের তদন্তের আওতাধীন বলে মত দেন তিনি। দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র বাংলানিউজকে একথার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

তিন মাস আগে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা যতন কুমার রায় এমপি এনামুলের বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন চেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন। প্রতিবেদনে অবৈধ সম্পদ, সম্পদের তথ্য গোপন এবং কর ফাঁকির অভিযোগ আনা হয়।

যতন কুমারের দাখিল করা প্রতিবেদনের আলোকে দুই কমিশনার এ-ব্যাপারে পরস্পরবিরোধী অবস্থান নেওয়ায় মামলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তই আর হতে পারেনি। প্রতিবেদনটির আলোকে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো: সাহাবুদ্দিন চুপ্পু মামলাটি নথিভুক্ত করার (অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার) পক্ষে মত দেন।

অপর দিকে কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. নাসির উদ্দিন মামলা করার পক্ষে সুপারিশ করেন।

এক পর্যায়ে নাসির উদ্দিনও তার অবস্থান থেকে সরে গিয়ে অভিযোগটির পুন:অনুসন্ধানের পক্ষে মত দেন। অবশেষে অভিযোগ থেকে নথিভুক্তির মাধ্যমে দুদক দায়মুক্তি দেয় এমপি এনামুলকে।

কমিশনার (তদন্ত) মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বাংলানিউজকে বলেন, অনুসন্ধান কর্মকর্তা ব্যক্তিগত সম্পদ আর প্রাতিষ্ঠানিক সম্পদকে ঘুলিয়ে ফেলেছেন। কর ফাঁকির যেসব বিষয় আছে, সেসব জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিষয়। এটা দুদকের তফসিলের আওতায় পড়ে না।

অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা যতন কুমার রায় বাংলানিউজকে জানান, এনামুল হকের বিরুদ্ধে ২১৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার সম্পদ গোপন করার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত দুই কোটি ৮৮ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলার সুপারিশ করা হয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন জমা দেন দুদকের এ কর্মকর্তা। পরে এ প্রতিবেদনের আলোকে দুদকের দুই কমিশনার দুই রকম (পরস্পরবিরোধী) অভিমত দেন।

দুই কমিশনারের দুই রকম মতের বিষয়টি গত ৩ নভেম্বর কমিশনের পূর্ণাঙ্গ বৈঠকে তুলে ধরা হয়। নথিভুক্ত করার (অব্যাহতির) অভিমত যথার্থ কি না, সে ব্যাপারে পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে। একমাস পর গত ১ ডিসেম্বর কমিশনের নিয়মিত বৈঠকে বিষয়টি আবারও উপস্থাপন করা হয়। কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু তার আগের মতে অটল থাকেন। অপর কমিশনার বিষয়টি নিয়ে আবারও অনুসন্ধানের সুপারিশ করেন। এখন অভিযোগ থেকে অব্যাহতি নাকি পুনরায় অনুসন্ধান হবে এটা পর্যালোচনা করে দুদক চেয়ারম্যান অবশেষে এনামুল হককে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

অনুসন্ধান কর্মকর্তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, এনামুল হকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের অর্থ-সম্পদ তো তারই সম্পদ। এ বিষয়ে তারই প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত অডিট রিপোর্টে স্বীকারোক্তি রয়েছে যে, উল্লেখিত অর্থ-সম্পদ বিবরণীর দায়-দায়িত্ব প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষই সব সম্পত্তির মালিক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এনামুল হক অডিট প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দুটি অডিট রিপোর্ট তৈরি করিয়েছেন। তিনি ভুয়া অডিট রিপোর্ট ব্যবহার করেন আয়কর ফাঁকি দেয়ার জন্য। উদারহণস্বরূপ বলা হয়, এনা প্রপার্টিজের নিট প্রফিট আফটার ট্যাক্স হয়েছে ৮৪ কোটি টাকা। অথচ ভুয়া অডিট রিপোর্ট দাখিল করে তিনি আয়কর শোধ করেছেন মাত্র ৮৭ লাখ টাকা।

দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে এনামুল এ গড়মিলের কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। এমনটাই দাবি করেছেন দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা যতন কুমার রায়। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম