বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ খুলনা: টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) জীববিজ্ঞান স্কুলের অনশনরত শিক্ষার্থীরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। এরইমধ্যে অসুস্থ আটজনকে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে।
এরা হলেন- মির্জা ওমর ফারুক মনি (ফিশারিশ ৩য় বর্ষ), অভিজিৎ বিশ্বাস (ফিশারিশ ৩য় বর্ষ), মো. রবিউল ইসলাম (ফিশারিশ ২য় বর্ষ), আবু সাইদ (ফিশারিশ ২য় বর্ষ), মো. আসাবুর রাহমান (ফার্মেসি ৪থ বর্ষ), অনিরুদ্ধ দাস (এগ্রোটেকনোলজি ৪র্থ বর্ষ), শামিম হোসেন (সয়েল সায়েন্স ১ম বর্ষ) ও কামাল হোসেন (সয়েল সায়েন্স ৩য় বর্ষ)
রোববার দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটে জীববিজ্ঞান স্কুলের ৭টি ডিসিপ্লিনের বেশ কিছু শিক্ষার্থীরা এ অনশন শুরু করেন।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১১টায় অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মো. ইমরান হোসেন বলেন, দুইদিন অনশনের ফলে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। রোদে পুড়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজেও অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অথচ কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবি মেনে নিচ্ছে না।
তিনি দ্রুত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার জন্য খুবির প্রশাসন, শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসি এমন কি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
তিনি জানান, পরীক্ষার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন।
জানা যায়, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন নিয়োগকে কেন্দ্র করে স্কুলের ডিসিপ্লিন প্রধান ও শিক্ষকদের একাংশ শিক্ষা কার্যক্রমে সহযোগিতা না করায় ২৩ জুন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে একদিকে উচ্চ আদালতের রুল এবং সর্বশেষ ডিন নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জের ফলে বিষয়টি এখন আদালত নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সেশনজটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, খুবি প্রশাসন আমাদের কাছ থেকে বারবার সময় নিয়েও পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করতে পারেনি। ফলে তারা ৭ ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা সেশনজট থেকে মুক্তির জন্য অনশনের পথ বেছে নিয়েছেন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান রোববার বিকেল ৫টায় অনশনরত এসব শিক্ষার্থীদের দেখতে যান এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি অনশন ভঙ্গ করার আহ্বান জানান এবং সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের কাছে এক সপ্তাহ সময় চান।
কিন্তু ভিসির আহ্বানে সাড়া দেয়নি জীব বিজ্ঞান স্কুলের অনশনরত শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, এর আগে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে ২৪ জুন স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন ও প্রধান গেটে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করে। ওই সময় তারা সামনের সড়ক অবরোধ, ২ জুলাই একই দাবিতে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন পালন করে।
সর্বশেষ ৩ জুলাই খুলনা প্রেসক্লাবে প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে ৭ জুলাই দুপুর ১টার মধ্যে খুবি প্রশাসনকে টার্ম পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার সময় বেধে দেয় শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা ঘোষণা দেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা না করা হলে তারা আমরণ অনশনের পথ বেছে নেবে। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষার্থীরা রোববার দুপুর ২টা থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান গেটে আমরণ অনশন শুরু করে।