শনিবার , ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ , ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ , ১৭ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

হোম > Uncategorized > অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন ॥ অনলাইন নীতিমালা করার মধ্যে গৌরবের কিছু নেই

অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন ॥ অনলাইন নীতিমালা করার মধ্যে গৌরবের কিছু নেই

শেয়ার করুন

বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥

ঢাকা: সম্প্রচার কমিশন ও অনলাইন নীতিমালা চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন কার্যক্রমকে এক ধরনের ‘শৃঙ্খল’ হিসেবে দেখছেন দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকরা।

তারা বলছেন, অনলাইন নীতিমালা করার মধ্যে গৌরবের কিছু নেই। দায়বদ্ধতা থাকলে নীতির দরকার হয় না। তবে খসড়া নীতিমালা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নয়, নিয়ন্ত্রণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে করা।

মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকরা এ মতামত দেন।

‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা, ২০১৫’-এর খসড়া নিয়ে এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

আলোচনায় সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, তথ্যসচিব মরতুজা আহমেদ, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) মহাপরিচালক শাহ আলমগীর, টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার, বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকার উদ্যোক্তা এ কে এম শরীফুল ইসলাম খান, মো. শফিউল আজম, শরিফ মোহাম্মদ মাসুম, জয়ন্ত আচার্য, শামসুল আলম স্বপন, মশিউর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সভার শুরুতে তথ্যমন্ত্রী ইনু বলেন, অনলাইন নীতিমালার খসড়া নিয়ে এটি প্রাথমিক আলোচনা। মন্ত্রিসভায় পাঠানোর আগে অংশীজনদের সঙ্গে এটি নিয়ে আরও আলোচনা হবে।

সাইবার স্পেসের নিরাপত্তার জন্য এই নীতিমালা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সম্প্রচার কমিশন ও অনলাইন পত্রিকার নীতিমালা প্রসঙ্গে সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার বলেন, শৃঙ্খলার নামে আমরা শৃঙ্খলিত হতে চাই না। অনলাইন নীতিমালা করার মধ্যে গৌরবের কিছু নেই। দায়বদ্ধতা থাকলে নীতির দরকার হয় না।

অনলাইন পত্রিকা নিবন্ধনের আগে সম্প্রচার কমিশন ও অনলাইন নীতিমালা তৈরির ওপর জোর দিয়ে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, নিবন্ধনের আগে নীতিমালা ও সম্প্রচার কমিশন করেন, তারপর নিবন্ধনের উদ্যোগ নিন।

‘নীতিমালা ও নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রণের আবহ লক্ষ্য করা যায়। তাই নিবন্ধনে তাড়াহুড়া না করে আরও আলোচনা-পর্যালোচনা করা দরকার,’ বলেন তিনি।

মতিউর রহমান বলেন, যত আইন বা নীতি করা হোক না কেন, শেষ বিচারে পাঠক, দর্শক ও শ্রোতা এবং বিজ্ঞাপন বা আয় গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ বা টিকে থাকার বিষয়টি নির্ধারণ করবে।

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ছাপা পত্রিকায় কোনো ভুল হলে এর দায়দায়িত্ব যেমন ওই পত্রিকার প্রকাশক বা সম্পাদকের, তেমনি ওই পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের যেকোনো ভুলের দায়দায়িত্বও তাদের।

সংশ্লিষ্টদের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ছাপা পত্রিকা যদি নতুনভাবে নিবন্ধন করে, তাহলে সেগুলোর দায়বদ্ধতা ও দায়িত্ববোধ কি আগের চেয়ে বাড়বে?

মাহফুজ আনাম মনে করেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নয়, এই অনলাইন নীতিমালা নিয়ন্ত্রণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে করা।

তবে অনলাইন নীতিমালার গুরুত্ব তুলে ধরে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেকোনো খবর অনলাইনে প্রকাশিত হলে তা এই নীতিমালায় পড়বে, যা নিয়ে বিভ্রান্তির যথেষ্ট সুযোগ থাকবে।

তিনি বলেন, ধর্মীয় অনুভূতি, সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষতা, দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়গুলো আরও সুস্পষ্ট থাকা দরকার। এটা না করা হলে বহুমাত্রিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

গত ০৯ নভেম্বর থেকে অনলাইন পত্রিকা ও ছাপা পত্রিকার অনলাইন সংস্করণের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য অধিদফতর। যা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।

সম্পাদকদের মতামত শুনে তথ্যসচিব মরতুজা আহমেদ অনলাইন পত্রিকার নিবন্ধন কার্যক্রমের সময় বাড়ানো কিংবা বিষয়টি আপাতত স্থগিত রাখতে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা তছির আহাম্মদকে পরামর্শ দেন।

ছাপাখানা আইনে পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ কভার করে না বলে মনে করেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহ আলমগীর।

তিনি বলেন, ছাপখানা আইনে অনলাইনের বিষয়টি কভার করে না। তাই ওই আইনটি সংশোধন করতে হবে, অথবা আইনে বিষয়টি উল্লেখ থাকতে হবে।

খসড়া নীতিমালা প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা লাগামহীন অনলাইন গণমাধ্যমের মধ্যে বসবাস করছি। এই প্রেক্ষাপটে একটি খসড়া দাঁড় করেছি। আলোচনা ও পর্যালোচনায় এর ত্রুটিগুলো দূর হবে। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম