বাংলাভূমি২৪ ডেস্ক ॥ ‘মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুতুলনাচের ইতিকথা পড়লে আমার গা জ্বলে যায়’- সাহিত্যগুণে অনবদ্য এই উপন্যাস সম্পর্কে এক বান্ধবীর মুখে প্রায়ই একথা শুনে আশ্চর্য হয়েই একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম কারণ। তার সাফ জবাব ছিল, ‘শরীর ছাড়া কি মন হয়? তাহলে বেচারি কুসুমকে কেন ওই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে? আর তাছাড়া সেক্স তো ছেলেদের একচেটিয়া নয়। ওরা সেটা নিয়ে প্যাশনেট হতে পারে। তবে আমরা কেন নয়? আমার তো মনে হয় সেক্সের প্যাশনটা মেয়েরাই ভাল বোঝে আর ফিল করে। ছেলেরা শুধু মুখে মাতামাতি আর বিছানায় ঝাপাঝাপির পর ঘুমিয়ে পড়ে বোকার মতো’- দাবি সেই বান্ধবীর। পরবর্তীকালে নানা বই, আলোচনায় সেই বান্ধবীর দাবি আরও পোক্ত করেছে আমার কাছে। শরীর নিয়ে ছেলেরা যতই খুল্লামখুল্লা হোক না কেন, শরীরপ্রেমের গভীর দাবি মেয়েদের মনে অনেক বেশি। সামাজিক বাধায় তা হয়তো ঢাকা থাকে।
কিন্তু মনোবিদ ও সেক্সোলজিস্টদের মতে সেই দাবির খানিকটা পুরুষ যদি পূরণ করতে পারে তবে প্রেমের সংজ্ঞা বদলে যেতে বাধ্য। মুখে প্রকাশ না করলেও মেয়েরা শরীরী খেলায় কী চায়, তা নিজের উদ্যোগ নিয়েই একটু জেনে নিতে হবে। রাতের বিছানা বিলাসে শুধুই কামনার আগুনে পুড়ে শরীর-শরীরে টালমাটাল হওয়া, নাকি নীরব আলিঙ্গনে রাত পার করে দেওয়া মানসীর কাম্য, এইটুকু জেনে নিলেই দাম্পত্য ম্যাজিকের গোপন চাবিকাঠি হাতে আসতে বাধ্য বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই প্রাথমিক শিা বলে, শরীর দিয়ে শরীর পাওয়ার চেয়ে সে জায়গায় মন রিপ্লেস করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
তাড়াহুড়ো করে কোনওদিন সাফল্য মেলে না। বিশেষজ্ঞদের মতে সারাদিনের শেষে বিছানায় প্রেয়সীকে নিবিড় আলিঙ্গনে নিয়ে সেটাকেই অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে গণ্য করা উচিত। তাই সেখানে কোনও ফাঁকিবাজি চলবে না। অসহিষ্ণু না হয়ে নারীর মনে কথা কিছুণ শুনুন। সারাদিনের কান্তির শেষে শরীরী খেলায় প্রথমে অনিচ্ছুক আপনার প্রিয়তমা কথার মধুতেই শরীরে ঘন হয়ে আসবে।
পুরুষরা যদিও বলে চেহারায় কী-ই বা আসে যায়, কিন্তু অধিকাংশ মহিলাই প্রিয় পুরুষের চোখে তার রূপদর্শন নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। বিশেষজ্ঞদের মতে, মেক-আপহীন নগ্ন অবস্থায় নিজেদের শরীর-মনের খুঁত ঢেকে ফেলতেই সেক্সের সময় অন্ধকার ঘর তার বেশি প্রিয়। সেই বিষয়ে হাসাহাসি না করে একটি সুন্দর রাতের জন্য পুরুষদের স্পর্শকাতরতা কাম্য। নারীকে আরও সময় দিয়ে জানুন।
ধরেই নেওয়া হয় সেক্সের েেত্র মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশি আগে হাল ছেড়ে দেয়। বছর ৫০-এর পুরুষের শরীরে-মনে নাকি যে পরিমাণ স্ফূর্তি আর চাহিদা থাকে তা সেই বয়সী মহিলা লালন করেন না বলে দাবি করেন অনেকে। কিন্তু জেনে রাখুন, সময়ের নিরিখে শরীরের আগুন মেয়েদেরও কম হয় না মোটেই। সামাজিক অভ্যেসের কারণে সেই ইচ্ছে ছাইচাপা থাকে মাত্র। অভিজ্ঞ-বুদ্ধিমান হিসেবে সেটাকে উসকে দেওয়ার কাজটুকুই শুধু আপনার।
সেক্স মানেই অর্গ্যাজম নয়। পুরুষের ভুল ধারণা আছে রতিবিলাসের একদম চূড়ান্তে না পৌঁছালে নারী বুঝি বা পৌরুষের হদিশ পায় না। সেেেত্র সহচরীর ইচ্ছের বিরুদ্ধের কামনাতাড়িত হয়ে সব কিছু পাওয়ার ভুলের মাসুল দিতে হয় বহুেেত্রই। পৌরুষ মানেই নারীর কাছে জুলুমবাজি নয়। নারীর কাছে এক রাতের রতিবিলাস মানে শুধুই ফোরপ্লে হতেই পারে। সেটুকু বুঝে নেওয়া অবশ্যই আপনার কাজ।
গুরুত্বপূর্ণ আর একটা উপদেশ। সেক্স বসের দেওয়া কোনও টাস্ক নয়। আপনার ইচ্ছে আর চাহিদার মিলমিশে একটা সুন্দরতম কিছু সময়। তাই সেই সময়টাকে অভ্যেসে পরিণত করে কিশেতর করবেন না। উপভোগ করুন। দেখুন তো সুন্দর রাতের শেষ ভাল লাগে কিনা?
সবশেষ এবং অমোঘ উপদেশ। রতিসুখ ছাড়াও অকারণ স্নেহের ছোঁওয়া নারীর বড়ই প্রিয়। তাই কপালে একটি ছোট্ট অকারণ চুমু বা চুলের স্নেহের বিলি আপনাকে না চাইতেই অনেক কিছু পাইয়ে দেবে। সেক্সের পর যত কান্তই লাগুক, পাশ ফিরে ঘুমিয়ে না পড়ে প্রিয় নারীকে এটুকু প্যাম্পার করতেই হবে।