সৌমেন মন্ডল,রাজশাহী থেকে ঃ
এবছর বসন্তের আগমনে রাজশাহী বাঘার প্রতিটি আম বাগান মুকুলের স্নিগ্ধ সৌরভে মোড়ানো ছিল। গেল কয়েক বছরের তুলনায় বাগানগুলোতে এ বছর মুকুল এসেছিল সবচেয়ে বেশি। উচ্চ ফলনের স্বপ্ন বুনেছিলেন কৃষকরা। কিন্তু গত ২০-২৫ দিনের ব্যবধানে বাঘা-চারঘাটে প্রায় ৭৫-৮০ শতাংশ বাগানের মুকুল নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাগানে আম নেই বললেই চলে। হপার পোকা, উকুন পোকা, অ-সময়ে বৃষ্টি ও তীব্র খরা এবং আবহাওয়াজনিত কিছু সমস্যার কারণেই বাগানগুলোর এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে মনে করছেন বাগান মালিক রা। বাগানের এমন পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন আম ব্যবসাহিরা।
রাজশাহীর অধিকাংশ আম উৎপাদন হয় বাঘা,চারঘাট,পুঠিয়া,পবা,দূর্গাপুর উপজেলায়। সম্প্রতি বাঘা, চারঘাটএবং পুঠিয়ার আম বাগান গুলো ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ বাগানের মুকুল নষ্ট হয়ে গেছে। বাগানের ৮০ শতাংশ গাছেই কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ আমের দেখা মিলছে না। গত মৌসুমের তুলনায় বাগানগুলোতে এবছর ১০-১৫ শতাংশ আম রয়েছে। এই পরিমাণ আমে উৎপাদ খরচ উঠানোই কষ্টকর হয়ে যাবে বলে মনে করছেন এ জেলার কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর রাজশাহী জেলার ৯ উপজেলায় ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমিতে আমচাষ হয়েছিল। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ টন আম। কিন্তু গাছে এবার আম কম আসার কারণে সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এ বছর জেলার প্রায় ১৯ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ টন। গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এ জেলার চাষিরা আম থেকে আয় করেছিল প্রায় ১ হাজার ৫২৮ কোটি ২ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭০ টাকা।
বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের বলিহার গ্রামের আমচাষি অভিজিৎ সরকার বলেন, নিজস্ব ১৮ বিঘা জমিতে বিভিন্ন প্রকার আমের বাগান রয়েছে। এবছরের মতো হপার ও উকুন পোকা আগে কখনো দেখিনি। ১৮ বিঘা বাগানে এখন পর্যন্ত কীটনাশক এবং অন্যান্য খরচ মিলায়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। বাগানের এই পরিস্থিতি দেখে খুব হতাশার মধ্যে আছি। আম উঠানোর আগ পর্যন্ত এখনো অনেক খরচ হবে। এই পরিমাণ আম দিয়ে খরচের টাকা উঠানোই কষ্টকর হয়ে যাবে।
জেলার চারঘাট উপজেলার ফতেপুর গ্রামের আমচাষি আতিকুর রহমান আশা বলেন, বাগানে গত বছরের তুলনায় আম নেই বললেই চলে। এ বছর যে মুকুলগুলো প্রথম দিকে এসেছিল সেগুলোতে শুধু আম হয়েছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের মুকুলের সকল আম তাপমাত্রার কারণে ঝরে গেছে। গতবার থেকে এ বছর ফলন কম হবে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাজশাহী জেলার উপপরিচালক উম্মে ছালমা খোলা কাগজকে বলেন, ‘রাজশাহীতে এবার শুরুতে প্রচুর মুকুল এসেছিলো কিন্তু বিভিন্ন পোকা আর ত্রীব্র খড়ার কারনে মুকুলঝড়ে গেছে এখন আম কম আছে